ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় দুই দল গ্রামবাসীর মাঝে সংঘর্ষ কালে আহত এক জনের রবিবার সকালে মৃত্যু হয়েছে। ধান কাটা কে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম মোঃ আলমগীর মাতুব্বর(৬০) তিনি উপজেলার আলগি ইউনিয়নের ছোটখারদিয়া গ্রামের মৃত্যু হাজী লাল মিয়ার ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ছোট খারদিয়া গ্রামে দুটি গ্রুপ রয়েছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয় ছানু মাতুব্বর, বাবলু মাতুব্বর ও সরো মাতুব্বর।
অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন কাওসার মাতুব্বর (আদম ব্যবসায়ী)ও জলিল মাতুব্বর।
গ্রামের সরকারি একটি হালট বের করতে গ্রামবাসী মাপঝোপ করেন। সেই হালটে কিছু অংশ জলিল মাতব্বরের বাড়িতে ঢুকে যায়। এ নিয়ে তিন থেকে চার মাস যাবৎ অপরপক্ষ ছানু মাতুব্বর দলের লোকরা হালট উদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এ নিয়ে ভাঙ্গা সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসে অভিযোগ করেন। ভূমি অফিস একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মীমাংসার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে গ্রামের দুই দলের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। ঈদুল ফিতরের পরের দিন সরো নাসিরকে লাইট দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তখন তারা সরো মাতুব্বর কে মারধর করেন। সেই মাইরের প্রতিশোধ নিতে ছানু, সরো গ্রুপরা সুযোগ খুঁজতে থাকে। গতকাল শনিবার বিকালে আদম কাওসার দলের আক্কাস মোল্লা তাদের নিজের জমিতে পাকা ধান কাটতে জমিতে গেলে ছানুর দলেরা ওদের ধাওয়া করে। তখন উভয় দলই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সঙ্গবদ্ধ হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তখন উভয় গ্রুপের প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত পাঁচজন আলমগীর মাতুব্বর, নুরু মোল্লা, কিফায়েত মোল্লা,সোলেমান মুন্সী,ও রেজাউল মাতুব্বরকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
গুরুতর আহত আলমগীর মাতুব্বর রবিবার সকালে ভাঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসা অবস্থায় তিনি মারা যান। অন্য আহতরা হচ্ছে-কুদ্দুস মাতুব্বর(৬৫),মিসরী বেগম(৩৫),রাঙ্গা মাতুব্বর(৬০), শাহজাহান মাতুব্বর(৪০),আক্কাস মোল্লা(৪০), সেকেন শেখ(৫৫), তুহিন শেখ(২৫),মামুন সেখ (৩০),পচা মাতুব্বর(৬০, হাকিম মাতুব্বর(২৩),রবি মাতুব্বর(৩৫),শহিদ শেখ(৪০),রাসেল মোল্লা(২৬),হাসিব মোল্লা(২৮)সহ আরো অনেকে। সংঘর্ষ কালে নিহত আলমগীর মোল্লার বাড়ি লুটপাট ও ভাংচুর চালায় ছানু গ্রুপের লোকেরা।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল ) মোঃ হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গতকাল ধান কাটা কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়। তখন গুরুতর আহত আলমগীর মোল্লা অদ্য সকালে হাসপাতালে মারা যান। নিহতের লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। ফের সংঘর্ষ ও লুটতরাজ এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।