দুই কোরিয়ার উত্তেজনার মধ্য শান্তির বার্তা দিয়েছেন কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং। তিনি বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে তার দেশ সংলাপে বসতে পারে। তবে তার জন্য অবশ্যই পারস্পারিক সম্মানবোধ ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়াও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দ্রুত সংলাপে বসার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। তবে সংলাপের পূর্বে দুই দেশের মধ্যে হটলাইন লিংক চালু করার দাবি জানিয়েছে সিউল।
সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া একটি নতুন দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। ক্ষেপণাস্ত্রটি ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার বা ৯৩০ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এরপর গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়াও সাবমেরিন চালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়। এ নিয়ে দেশ দুটির মধ্য চরম উত্তেজনা শুরু হয়।
উত্তেজনার মধ্যে চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন কোরিয়া উপদ্বীপে শান্তি ফিরিয়ে আনতে তাদের দুই পক্ষের বন্ধু যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বন্দ্ব নিরসনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তবে উত্তর কোরিয়ার এক মন্ত্রী প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়।
কিন্তু শুক্রবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এক সংবাদ বিবৃতিতে প্রেসিডেন্টের বোন কিম ইয়ো জং বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া তাদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ নীতি বাদ দিলেই উত্তর কোরিয়া আলোচনায় বসতে আগ্রহী।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এজন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে দ্বৈত সমঝোতার মনোভাব, অযৌক্তিক কুসংস্কার, বাজে অভ্যাস ও নিজেদের কর্মকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাওয়ার মতো বিদ্বেষমূলক অবস্থান পরিবর্তন করতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের আত্মরক্ষার অধিকারচর্চা ও ভুল ধরার মানসিকতা থেকেও বের হয়ে আসতে হবে।’
এরপর শনিবারও তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপ নিয়ে কথা বলেন।
এক বিবৃতিতে কিমের বোন বলেন, কিম জং উন ও মুনের মধ্যে আন্তঃসামিট কেবল তখনই হতে পারে, যখন একে অন্যের প্রতি সম্মান ও নিরপেক্ষতা প্রদর্শন করবে।
উত্তর কোরিয়ার এই প্রভাবশালী নেতা আরও বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার একে অন্যের ওপর দোষ চাপানো ও বাকযুদ্ধ চালিয়ে অযথা সময় নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সামিটের পাশাপাশি যুদ্ধ সমাপ্তের বিষয়েও সংলাপ হতে পারে।
১৯৫০ সালে দুই কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৫৩ সালে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে যুদ্ধ সমাপ্ত হয়। যুদ্ধবিরতি হলেও দুই দেশের মধ্যে কোনো শান্তিচুক্তি হয়নি। ফলে অর্ধ শত বছর পর্যন্ত এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।
সূত্র : যুগান্তর